নৌকাসহ ১৯ জেলেকে অপহরণ করেছে মিয়ানমারের আরাকান আর্মি
নৌকাসহ আরাকান আর্মির কাছে অপহৃত ১৯ জেলে

নিউজ ডেস্ক, ঢাকা ফ্ল্যাশ
কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার নাফ নদ থেকে মাছ ধরার সময় চারটি নৌকাসহ ১৯ জন মাঝিমাল্লাকে মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ) ধরে নিয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার সকাল ও দুপুরে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের ঘোলারচর এবং নাফ নদের নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এর আগে গত ১০ ফেব্রুয়ারি নাফ নদের মোহনা থেকে ছয় বাংলাদেশি জেলেকে ধরে নিয়ে যায় আরাকান আর্মি, যাদের এখনও ছাড়া হয়নি।
টেকনাফ কায়ুকখালী বোট মালিক সমিতির সভাপতি আবদুল জলিল ঘটনাটি নিশ্চিত করে বলেন, “টেকনাফে ফেরার পথে আমাদের ঘাটের দুটি ট্রলারসহ নয়জন মাঝিমাল্লাকে আরাকান আর্মি ধরে নিয়ে গেছে। এর আগে ধরে নেওয়া ছয় জেলেকে এখনও ছাড়েনি তারা। এ ঘটনায় মাছ ব্যবসায়ী ও জেলেদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। আমরা সরকারের সহযোগিতা কামনা করছি।”
এছাড়া শাহপরীর দ্বীপের মাঝপাড়া এলাকা থেকে দুটি নৌকাসহ ১০ মাঝিমাল্লাকে ধরে নিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন মাঝপাড়া নৌঘাটের সাধারণ সম্পাদক আবদুর গফুর। তিনি বলেন, “মো. কালাইয়া ও জাফর আলমের মালিকানাধীন দুটি নৌকা নিয়ে ১০ মাঝিমাল্লা মাছ ধরতে গিয়েছিলেন। নাফ নদে মাছ ধরার সময় আরাকান আর্মির সদস্যরা তাদের ধাওয়া করে ধরে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় জেলেদের পরিবারগুলোর মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক টেকনাফ সীমান্তের বিজিবির এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, “নাফ নদ থেকে জেলেদের ধরে নিয়ে যাওয়ার খবর পেয়েছি। আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি এবং তাদের দ্রুত ফেরত আনার চেষ্টা চলছে।”
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, “জেলেদের ধরে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা দুঃখজনক। আমরা বিজিবির সঙ্গে আলোচনা করে তাদের ফেরত আনার চেষ্টা চালাবো।”
স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী তারেক উর রহমান বলেন, “প্রায়ই জেলেদের মিয়ানমারে ধরে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে। এতে আমরা উদ্বিগ্ন। যদি এ সমস্যার সমাধান না হয়, জেলেরা মাছ ধরতে যেতে ভয় পাবেন। এতে তাদের জীবিকা হুমকির মুখে পড়বে।”
উল্লেখ্য, গত বছর ৬ অক্টোবর টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ থেকে ছয়টি ট্রলারসহ ৫৮ জেলে মাছ ধরতে গেলে মিয়ানমার নৌবাহিনী তাদের অপহরণ করে। ওই সময় মিয়ানমার নৌবাহিনীর গুলিতে এক জেলে নিহত ও দুইজন আহত হন। পরে অবশিষ্ট জেলেদের ফেরত দেওয়া হয়। এ ঘটনায় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কঠোর প্রতিবাদ জানানো হয়েছিল। সর্বশেষ গত ১৫ অক্টোবর আরাকান আর্মির হেফাজত থেকে ১৬ বাংলাদেশি জেলেকে ফেরত আনে বিজিবি।