বাংলাদেশে সাংবাদিকদের ওপর হামলা বাড়ছে, উদ্বেগ প্রকাশ করে ব্যবস্থা নেয়ার আহবান আরএসএফ এর
আরএসএফের বিবৃতি

নিউজ ডেস্ক, ঢাকা ফ্ল্যাশ
বাংলাদেশে সাংবাদিকদের ওপর সহিংস হামলা বেড়ে যাওয়ায় তা বন্ধে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংগঠন রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স (আরএসএফ)। সংগঠনটি বলছে, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়ার আশা থাকলেও বাস্তবে তারা এখনো অরক্ষিত। নিয়মিত হামলা, লাঠিপেটা ও বার্তাকক্ষ আক্রমণের মতো ঘটনা ঘটছে।
১৪ ফেব্রুয়ারি আরএসএফের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি ফেব্রুয়ারির শুরু থেকে বাংলাদেশে সাংবাদিকদের ওপর হামলার সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে। পুলিশ, রাজনৈতিক নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের দ্বারা সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালানো হচ্ছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের কার্যালয়ও আক্রমণের শিকার হয়েছে।
আরএসএফের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের বিচারের আওতায় আনা এবং সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের প্রতি জোরালো আহ্বান জানাচ্ছি আমরা।’
চলতি মাসে দেশের বিভিন্ন স্থানে সাংবাদিকদের ওপর হামলার কয়েকটি ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে আরএসএফের প্রতিবেদনে। এর মধ্যে রয়েছে:
- চট্টগ্রাম: ১২ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম প্রতিদিনের কার্যালয়ে কয়েক শ লোকের হামলার চেষ্টা।
- শরীয়তপুর: ৩ ফেব্রুয়ারি দৈনিক সমকালের স্থানীয় প্রতিনিধি সোহাগ খানকে হাতুড়িপেটা ও ছুরিকাঘাত।
- ঢাকা: ৫ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে এটিএন নিউজের সাংবাদিক জাভেদ আখতারের ওপর বিএনপি সমর্থকদের হামলা।
- ঢাকা: ৬ ফেব্রুয়ারি শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি ভাঙচুরের সময় কয়েকজন সাংবাদিকের ওপর বিক্ষোভকারীদের হামলা।
এছাড়া, ৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় ছাত্র বিক্ষোভের সময় ছয় সাংবাদিকের ওপর পুলিশের হামলার ঘটনাও উল্লেখ করা হয়েছে। সাংবাদিকরা জানিয়েছেন, পরিচয়পত্র দেখানোর পরও তাদের ওপর লাঠিপেটা ও লাথি মারা হয়েছে।
আরএসএফের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ডেস্কের প্রধান সিলিয়া মার্শিয়ে বলেন, ‘গত কয়েক দিনে বাংলাদেশে সাংবাদিকদের ওপর একের পর এক গুরুতর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এটি দেশটিতে গণমাধ্যমের ওপর সহিংসতা বৃদ্ধির উদ্বেগজনক ইঙ্গিত। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর উন্নতির আশা থাকলেও সাংবাদিকরা এখনো অরক্ষিত।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘সাংবাদিকরা দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় আক্রমণের শিকার হচ্ছেন। প্রতিবেদন প্রকাশের কারণে শারীরিক হেনস্তার শিকার হচ্ছেন। বার্তাকক্ষ আক্রমণের মতো ঘটনাও ঘটছে। এসব হামলার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনা এবং গণমাধ্যমকর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি জোরালো আহ্বান জানাচ্ছি।’
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম আরএসএফের বক্তব্যের সঙ্গে একমত নন বলে জানিয়েছেন। বাংলাদেশের একটি শীর্ষ দৈনিক পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে পাঁচজন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। এরপর ব্যক্তিগত পর্যায়ে কিছু ঘটনা ঘটেছে। প্রতিটি ঘটনার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সাংবাদিকদের ভয়ভীতি প্রদর্শনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’