সদ্যবিলুপ্ত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা এবং পল্লবী থানা কমিটির আহ্বায়ক শেখ তারেক জামিল তাজের বিরুদ্ধে ২৫ লাখ টাকার বদলি বাণিজ্যসহ একাধিক চাঁদাবাজির গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি একটি মেসেজিং অ্যাপের কথোপকথনের স্ক্রিনশট ভিডিও ফাঁস হওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে।

ফাঁস হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, একটি সরকারি চাকরির বদলির তদবিরের জন্য এক ব্যক্তি ২৫ লাখ টাকা দিতে রাজি হলেও শেখ তারেক জামিল তাজ তাতে সন্তুষ্ট নন। তিনি ওই ব্যক্তিকে বাজেট আরও বাড়ানোর জন্য চাপ দিচ্ছেন। কথোপকথনে তাজকে বলতে শোনা যায়, বাজেট বাড়ালেই কাজ ‘শিওর’ হবে, অন্যথায় নয়। এই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর আন্দোলনের স্বচ্ছতা ও নেতাদের নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

শুধু বদলি বাণিজ্যই নয়, তাজের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগও বেশ পুরনো। সম্প্রতি রাজধানীর গুলশানে সাবেক এক সংসদ সদস্যের বাসায় চাঁদাবাজির চাঞ্চল্যকর ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান রিয়াদের সাথে তার ঘনিষ্ঠ সখ্যতার বিষয়টিও সামনে এসেছে। রিয়াদকে সাথে নিয়ে তাজ বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত ছিলেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

এরই মধ্যে আরেকটি চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। গত ২৮ অক্টোবর পল্লবী এলাকার এক ব্যবসায়ীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে মোটা অংকের চাঁদা দিতে বাধ্য করেন তাজ ও তার সহযোগীরা। ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী চাঁদা পরিশোধ করার পরেও তাদের ভয়ে বর্তমানে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এই ঘটনার মূলহোতা হিসেবেও তাজের নাম নিশ্চিত হওয়া গেছে।

উল্লেখ্য, কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন পরবর্তীতে ‘এক দফা’ আন্দোলনে রূপ নেয় এবং দেশব্যাপী শিক্ষার্থীদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলে। কিন্তু আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা একজন নেতার বিরুদ্ধে একের পর এক আর্থিক কেলেঙ্কারি, চাঁদাবাজি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ ওঠায় পুরো আন্দোলনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে বলে মনে করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

এই অভিযোগগুলোর বিষয়ে কথা বলার জন্য শেখ তারেক জামিল তাজের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরটিও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।