[t4b-ticker] পাকিস্তানে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত : নিউইয়র্ক টাইমস - Dhaka Flash



ব্রেকিং নিউজ:
আজ : ১৪ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩১শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, বুধবার প্রকাশ করা : এপ্রিল ২৮, ২০২৫

  • কোন মন্তব্য নেই

    পাকিস্তানে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত : নিউইয়র্ক টাইমস

    পাকিস্তানে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত : নিউইয়র্ক টাইমস

    ছবি- সংগৃহীত

    নিউজ ডেস্ক, ঢাকা ফ্ল্যাশ

    জম্মু ও কাশ্মিরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। এই পরিস্থিতিতে সামরিক সংঘাতের আশঙ্কাও বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ সংযম ও সংলাপের মাধ্যমে সংকট সমাধানের আহ্বান জানালেও ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছে প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস। রোববার (২৭ এপ্রিল) প্রকাশিত সংবাদমাধ্যমটির এক প্রতিবেদনে এই প্রস্তুতির কথা জানানো হয়।

    ভারতের কূটনৈতিক তৎপরতা ও সামরিক প্রস্তুতি

    সন্ত্রাসী হামলার পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক ডজনেরও বেশি দেশের নেতাদের সঙ্গে ফোনালাপ করেছেন। এছাড়া, দিল্লিতে অবস্থিত বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক মিশনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তবে, সূত্রে জানা গেছে, ভারতের এই প্রচেষ্টা আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ের চেয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের যৌক্তিকতা প্রতিষ্ঠায় বেশি নিবদ্ধ।

    গত বৃহস্পতিবার এক ভাষণে মোদি পাকিস্তানের নাম উল্লেখ না করলেও “সন্ত্রাসীদের আস্তানা ধ্বংস” ও “কঠোর শাস্তি” দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন। এদিকে, দুই দেশের সীমান্তে টানা কয়েক রাত ধরে গোলাবর্ষণের খবর পাওয়া গেছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী কাশ্মিরে ব্যাপক অভিযান চালিয়ে শতাধিক সন্দেহভাজনকে আটক করেছে।

    পাকিস্তানের পাল্টা পদক্ষেপ

    ভারতের পানি প্রবাহ বন্ধ ও কূটনৈতিক কর্মীদের ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্তের জবাবে পাকিস্তান কাশ্মির সীমান্তে যুদ্ধবিরতি চুক্তি (এলওসি) স্থগিত ঘোষণা করেছে। এছাড়া, ভারতে মুসলিমবিরোধী মনোভাব বৃদ্ধি পাওয়ায় কাশ্মিরি শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্থানে হয়রানির শিকার হচ্ছেন, অনেকে বাড়ি ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।

    হামলার দায়িত্ব নিয়ে অনিশ্চয়তা

    হামলার পাঁচ দিন পরও ভারত সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর নাম ঘোষণা করেনি। পাকিস্তানও হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। ভারতীয় কর্মকর্তারা কূটনৈতিক ব্রিফিংয়ে পাকিস্তানের অতীতের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ইতিহাস তুলে ধরলেও এবারের হামলার সরাসরি প্রমাণ এখনও প্রকাশ করেনি।

    বিশ্লেষকদের মতে, হয় ভারত আরও প্রমাণ সংগ্রহ করছে, নয়তো আন্তর্জাতিক সমর্থন পেয়ে গেলে বিস্তারিত ব্যাখ্যা ছাড়াই সামরিক পদক্ষেপ নিতে পারে। তবে, দুই দেশই পারমাণবিক শক্তিধর হওয়ায় যেকোনো সংঘাত ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে।

    আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভূমিকা

    ইরান ও সৌদি আরব সংকট নিরসনে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিলেও যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য বড় শক্তিগুলো সরাসরি হস্তক্ষেপে অনিচ্ছুক। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ে সমর্থন জানালেও, দক্ষিণ এশিয়া তার অগ্রাধিকারের তালিকায় নিচে রয়েছে বলে মনে করা হয়।

    ২০১৯-এর স্মৃতি ও বর্তমান পরিস্থিতি

    ২০১৯ সালে পুলওয়ামা হামলার পর ভারত পাকিস্তানে বিমান হামলা চালিয়েছিল, যার জবাবে পাকিস্তান একটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে পাইলটকে আটক করেছিল। এবারও ভারত বড় ধরনের জবাব দিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে, পাকিস্তানও পাল্টা আক্রমণের হুমকি দিয়েছে।

    সাবেক ভারতীয় জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিব শঙ্কর মেনন বলেছেন, “মোদি সরকারের জন্য সামরিক পদক্ষেপ ছাড়া বিকল্প কম। তবে, উভয় পক্ষই সংঘাত নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইবে।”

    এমন পরিস্থিতিতে, প্রমাণ ছাড়াই শুধু অতীতের রেকর্ডের ভিত্তিতে পারমাণবিক প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামা কতটা যুক্তিযুক্ত, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে কূটনৈতিক মহলে।

    জ/ক