[t4b-ticker] ধর্ষকদের প্রকাশ্য মৃত্যুদণ্ডের দাবিতে ঢাবিতে মশাল মিছিল - Dhaka Flash



ব্রেকিং নিউজ:
আজ : ১৪ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩০শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, সোমবার প্রকাশ করা : মার্চ ৯, ২০২৫

  • কোন মন্তব্য নেই

    ধর্ষকদের প্রকাশ্য মৃত্যুদণ্ডের দাবিতে ঢাবিতে মশাল মিছিল

    ধর্ষকদের প্রকাশ্য মৃত্যুদণ্ডের দাবিতে ঢাবিতে মশাল মিছিল

    ধর্ষকদের প্রকাশ্য মৃত্যুদণ্ডের দাবিতে ঢাবিতে মশাল মিছিল

    নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা ফ্ল্যাশ

    সাম্প্রতিক সময়ে দেশব্যাপী ধর্ষণ ও নারী নিপীড়নের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় এসব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মশাল মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ধর্ষণবিরোধী মঞ্চের আয়োজনে রোববার (৯ মার্চ) রাত ৮টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে এ মশাল মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে আবার রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়।

    মিছিল ও সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, বদরুন্নেসা মহিলা কলেজসহ রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। সমাবেশে বক্তারা ধর্ষকদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান। তারা ধর্ষকদের প্রকাশ্যে ফাঁসির দাবি জানিয়ে বলেন, শুধু শাস্তির আশ্বাস নয়, ধর্ষকদের শাস্তি কার্যকর করা হোক। শাস্তি কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত তারা রাজপথ ছাড়বেন না বলে হুঁশিয়ারি দেন।

    সমাবেশে শিক্ষার্থীরা ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস, জাস্টিস জাস্টিস’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস, হ্যাংক দ্য র্যাপিস্ট’, ‘আমার সোনার বাংলায়, ধর্ষকদের ঠাঁই নাই’, ‘তুমি কে আমি কে, আসিয়া আসিয়া’, ‘আমার বোন তোমার বোন, আসিয়া আসিয়া’, ‘আমার বোনের কান্না, আর না আর না’, ‘একটা একটা ধর্ষক ধর, ধরে ধরে কবর দে’, ‘রশি লাগলে রশি নে, ধর্ষকদের ফাঁসি দে’, ‘ধর্ষকদের কালো হাত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’, ‘২৪ এর বাংলায়, ধর্ষকদের ঠাঁই নাই’, ‘জাহাঙ্গীর করে কি? খায় দায় ঘুমায় নাকি?’—এ ধরনের বিভিন্ন স্লোগান দেন।

    সমাবেশে ধর্ষণবিরোধী মঞ্চের পক্ষ থেকে পাঁচ দফা দাবি পেশ করা হয়। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—

    আসিয়ার মামলার ক্ষেত্রে বিশেষ ট্রাইবুনাল গঠন করে ৭ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া এবং ১ মাসের মধ্যে বিচারিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করা। এ ছাড়া বিচার প্রক্রিয়া চলাকালীন আসিয়ার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়।

    দ্বিতীয় দাবিতে বলা হয়, প্রতিটি ধর্ষণ মামলার বিচারের জন্য বিশেষ ট্রাইবুনাল গঠন করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিচারকার্য সম্পন্ন করতে হবে। এ জন্য ৩ কার্যদিবসের মধ্যে বিশেষ ট্রাইবুনাল গঠন করে দ্রুত বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।

    তৃতীয় দাবিতে নারী ও শিশুর নিরাপত্তার প্রশ্নে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, আইন উপদেষ্টা, নারী ও শিশুবিষয়ক উপদেষ্টার ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে তাদের জবাবদিহি করার কথা বলা হয়।

    চতুর্থ দাবিতে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রে ‘নারী ও শিশু নিপীড়নবিরোধী সেল’ গঠন ও সেলের কার্যকারিতা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়।

    পঞ্চম দাবিতে ধর্ষণ, যৌন নিপীড়ন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাইবার বুলিং সংক্রান্ত আইনের সংশোধন করে অপরাধের স্পষ্ট ও যথাযথ সংজ্ঞায়ন করার দাবি জানানো হয়।

    সমাবেশে বক্তারা বলেন, ধর্ষণ ও নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র ও সমাজকে কঠোর অবস্থান নিতে হবে। ধর্ষকদের কোনো ধরনের ছাড় না দিয়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। তারা আরও বলেন, নারী ও শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারলে দেশের উন্নয়ন অর্থহীন। তাই সরকার ও প্রশাসনকে এ বিষয়ে জোরালো ভূমিকা রাখতে হবে।

    শিক্ষার্থীরা তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে বলেন, ধর্ষকদের শাস্তি নিশ্চিত না করা পর্যন্ত তারা মাঠে থাকবেন। তারা সরকার ও প্রশাসনের কাছে তাদের দাবিগুলো বাস্তবায়নের জোরালো আহ্বান জানান।

    এদিকে, সাম্প্রতিক সময়ে ধর্ষণ ও নারী নিপীড়নের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় দেশব্যাপী ব্যাপক ক্ষোভ ও প্রতিবাদের সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ধর্ষণের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছে। এ পরিস্থিতিতে ধর্ষণবিরোধী মঞ্চের এ মশাল মিছিল ও সমাবেশ নারী নিরাপত্তা ও ধর্ষণ প্রতিরোধের দাবিতে আরও জোরালো আন্দোলনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।