তিস্তার পানি ন্যায্য হিস্যা চাই: মির্জা ফখরুল
তিস্তার পানি

নিউজ ডেস্ক, ঢাকা ফ্ল্যাশ
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “ভারতকে আগেও বলেছি, এখনো পরিষ্কারভাবে বলছি, বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে চাইলে তিস্তার পানি ন্যায্য হিস্যা দিন। সীমান্ত হত্যা বন্ধ করুন। আমাদের সঙ্গে বড় ভাই বা মাস্তানমুখী আচরণ বন্ধ করুন। আমরা আমাদের পায়ের ওপর দাঁড়াতে চাই। আমাদের প্রাপ্য বুঝে নিতে চাই। আমরা ভারতকে বন্ধু হিসেবে দেখতে চাই, তবে সেই বন্ধুত্ব সম্মানের সঙ্গে হতে হবে এবং আমাদের পাওনা যেন ন্যায্যভাবে আদায় হয়।”
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে লালমনিরহাট সদর উপজেলার তিস্তা রেলসেতু এলাকায় ‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের ৪৮ ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, “শুধু তিস্তা নয়, ভারত থেকে বাংলাদেশে আসা ৫৪টি নদীর উজানে বাঁধ দিয়ে পানি প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর ফলে আমাদের কৃষকরা ফসল ফলাতে পারছে না, জেলেরা মাছ ধরতে পারছে না। এখানকার মানুষ জীবন-জীবিকা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ভারত পানি তুলে নিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে, আর আমরা পানির অভাবে হাহাকার করছি।”
আওয়ামী লীগ ও ভারতের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, “ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে আমরা ১৫ বছর ধরে লড়াই করেছি। আমাদের ছেলেরা লড়াই করেছে, অনেকেই ভারতে পালিয়েছে। কিন্তু ভারত একদিকে আমাদের পানি দিচ্ছে না, অন্যদিকে আমাদের শত্রুদের সমর্থন দিচ্ছে। দিল্লিতে তাদের রাজকীয় আচরণ করা হচ্ছে, যেখান থেকে তারা আমাদের বিরুদ্ধে হুকুম জারি করছে।”
উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ আজ পালিয়ে গেছে। কিন্তু এই সংগ্রাম বাঁচা-মরার সংগ্রাম। তিস্তাপাড়ের মানুষের এই সংগ্রামকে আমরা কখনো থামতে দেব না।”
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “আপনারা নিজেদের নিরপেক্ষ দাবি করেন। কিন্তু নিরপেক্ষতা এখানে যথেষ্ট নয়। আপনাকে স্পষ্টভাবে বলতে হবে, ভারতকে বলতে হবে যে আমাদের পানির ন্যায্য হিস্যা আমরা চাই। আর দ্রুত নির্বাচন দিন, জনগণের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দিন।” তিস্তার পানি
তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের প্রধান ও বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সামসুজ্জামান দুদু। এছাড়াও জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বিপ্লবী ওয়াকার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বেবী নাজনীন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
তিস্তা নদীর দুই পাড়ের ৫টি জেলার ১১টি পয়েন্টে ৪৮ ঘণ্টার এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। লালমনিরহাট, রংপুর, নীলফামারী, গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রাম জেলার বিভিন্ন স্থানে মঞ্চ ও থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিস্তাপাড়ের শিশু-বৃদ্ধ, নারী-পুরুষ সবাই এই আন্দোলনে অংশ নিয়ে ‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে মুখরিত করে তুলেছেন তিস্তা নদীর দুই তীর।